বাংলাদেশের যুগান্তকারী সাময়িকী মিজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা তাঁর মৃত্যুতে বন্ধ যাওয়ার পর আবার প্রকাশিত হতে যাচ্ছে দস্তইয়েফস্কি সংখ্যার মধ্যদিয়ে মশিউল আলমের সম্পাদনায়। এ দস্তইয়েফস্কি মানুষটা-ই বা কে ?
আমার বিবেচনায় দস্তইয়েফস্কি
একজন মামুলি সাহিত্যিক, কিন্তু তিনি মানব চরিত্র সম্পর্কে আশ্চর্য দার্শনিক ভঙ্গিতে কথাবার্তা উপস্থাপন করেন যেনবা এগুলো চিরন্তন বাক্য।
অথচ তার উপন্যাস গুলোর নাম দেখুন, 'লাঞ্ছিত বঞ্চিত', 'অপরাধ এবং শাস্তি', এবং আরো একটার নাম শুনছিলাম -যেটার বাংলা করলে দাঁড়ায় 'গোপনস্থানে অবস্থানকারীর প্রেরিত নোট'। এছাড়া আরো কয়েকটি বই তাঁর আছে। এসব মামুলি শিরোনামের বই কোন চমক জাগায় না।
কাজেই তার কোন বই আমি পড়ি নাই। আবার তার বইগুলো এতো বিশাল বিশাল যে,এগুলো পড়া আর নির্জন বনবাসে যাওয়া একই কথা। কসরত করার এত সময় কই! ডারউইনের লেখা পড়লে বুঝা যায় মানুষ প্রকৃতির জৈবিক বিবর্তন প্রক্রিয়ার একটা ফসল। জৈবিক প্রক্রিয়া মধ্যে প্রকৃতিতে যোগ্যতররাই টিকে থাকে। অর্থাৎ যারা বিদ্যমান পরিবেশের সাথে অভিযোজন ঘটাতে পারে,প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাস্ত করতে পারে, টিকে থাকে তারা। ধর্মগ্রন্থগুলোর
কোনো কোনোটিতে মানুষকে উন্নত মানের পশু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে; বলা হয়েছে তার রিপুগুলোকে দমন করতে।
এদিকে ফ্রয়েড সাহেব বলছেন, মানুষের অবচেতনের সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা তাকে চালিত কবে। আকাঙ্ক্ষার অবদমনের ফলে মানুষ অস্বাভাবিক আচরণ করে এর মধ্যে যৌন তাড়না উল্লেখযোগ্য। কাজেই উন্নত মানের পশু হিসেবে মানুষ একদিকে যেমন মানবিক আবার অন্যদিকে পাশবিক বা ধ্বংসাত্মকও। এর বাইরে দস্তইয়েফস্কি নতুন আর কি বলবেন আমার মাথায় আসেনা। আমার এ অনুমান বিশ্বাস না হলে মিজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকার দস্তইয়েফস্কি বিশেষ সংখ্যাটি পড়ে দেখতে পারেন। এই পত্রিকাটি এখন সম্পাদনা করছেন মশিউল আলম নামক জনৈক ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো লেখক। আপনারা পড়ে যদি অভিনব কিছু পান, জানাবেন। তবে আমি এক কপি কিনে পুরোটাই পড়ে আমার অনুমান এর সত্যতা যাচাই করব। এই কর্পোরেট দানব সাম্রাজ্যের যুগেও ভালো মানুষগুলো কেন যে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে যায়, এটা জানতে আমার বড় কৌতুহল। এই প্রকাশনার টেক্সট পড়ে আমি বুঝতে চাই এখনো দায়বদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিশীল মানুষ কেন এরকম পাগলামিতে ব্রত হন।
-সবিনয়ে
দস্তইয়েফস্কি না পড়া একজন পাঠক।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: সাহিত্য না পড়েও মানুষের জীবন চলে যায়, কিন্তু একথা সত্য যে, মানুষ এসবের স্পর্শের বাইরে থাকতে পারেনা। কোন না কোন মাধ্যমে এগুলো মানব জীবনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। আরেকটি গুরুতর সত্য যে,মানব সম্প্রদায়ের
পাগলামীর ইতিহাস তার জীবনের সমবয়সী এবং এটি মানব সম্প্রদায়ের সৃজনপ্রয়াসী কর্মপ্রচেস্টার
অন্যতম প্রধান প্রেরণায়ী।
No comments:
Post a Comment